Thursday, May 24, 2018

নাস্তিকতা নিয়ে ধার্মিকদের মিথ্যাচার :
ধার্মিকদের জ্ঞান এতোই কম যে তারা নাস্তিকতা সম্পর্কেও ভালো করে জানে না। তারা এতো অলস যে হাতেই ফোন,ল্যাপটপ এবং ইন্টারনেট থাকা সত্তেও গুগোলে সার্চ দিয়েও সঠিকভাবে শিখতে চায় না। তারা মিথ্যাচার করে বলে, "নাস্তিকতারা নাকি বলে সৃষ্টিকর্তা নেই"। কতোটা মূর্খ হলে এমন কথা বলা যায় ভাবুন? কেউ যদি কোন কিছু দাবী করে তাহলে সেটা প্রমাণ করার দায়িত্ব শুধুই তার কারণ সেই বিষয়টি দাবী করেছে। এই সামান্য লজিকই তারা বুঝে না, তাদের সাথে আর কি তর্ক করবো?যেমন আমি যদি বলি,আমি প্রতি রাতে চাঁদে গিয়ে এক কাপ কফি খেয়ে আবার পৃথিবীতে ফিরে এসে ঘুমিয়ে পরি। এখন এটা নিশ্চয়ই কেউ বিশ্বাস করবে না এবং সবাই আমাকে বলবে, তুমি চাঁদে গিয়েছো তা প্রমাণ করে দেখাও কিন্তু আমি যদি উল্টো সবাইকে বলি, "আমি যে চাঁদে যাই নাই" এটা তোমরা প্রমাণ করে দেখাও। তাহলে আমার এই কথাটা হবে সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং মূর্খতাপূর্ণ। যেহেতু আমি নিজেই দাবী উত্থাপন করেছি তাই এইটা প্রমাণ করার সম্পূর্ণ দায়ভার আমার উপরেই বর্তায়। এখন আসি আসল পয়েন্টে, পৃথিবীতে সব ধর্মের মানুষরাই খুব জোড়ালোভাবে দাবী করে সৃষ্টিকর্তা আছে কিন্তু আমরা যখন সৃষ্টিকর্তা আছে তার প্রমাণ তাদের কাছে চেয়েছি তখন তারা প্রমাণ দিতে পারে না এবং মূর্খের মতো বলে এটা অন্ধভাবে বিশ্বাস করতে হবে। আমরা যখন তাদের কথা মানতে না চাই তখন তারা আরো বেশি অযৌক্তিক এবং মূর্খতাপূর্ন কথা বলে, "তারা বলে 'সৃষ্টিকর্তা যে নাই' এটা তোমরা প্রমাণ করে দেখাও।" ব্যাপার টা যে কতোটা হাস্যকর একবার ভেবে দেখুন। মাঝে মাঝে তারা মূর্খের মতো আমাদের চেলেঞ্জ করে বলে, "তোমার সাহস থাকলে যক্তিতর্ক করো, "সৃষ্টিকর্তা নেই" এটা প্রমাণ করো।"
আমরা এতোটাই বোকা নয় যে এইসব জ্ঞানহীন মানুষের সাথে যুক্তিতর্ক করবো যারা কিনা মৌলিক যুক্তিবিদ্যাই বোঝে না। এমন কি তারা নিজেদের ধর্মগ্রন্থ অর্থসহকারে পড়েছে কিনা সন্দেহ আছে। কারো সাথে যুক্তিতর্ক করার আগে দেখতে হয় সে কতোটা জ্ঞানী এবং নিজের ধর্মগ্রন্থ কতোটা জানে। এরা হচ্ছে, "বিচার যাই হোক তাল গাছ আমার" এই যুক্তিতে ১০০% বিশ্বাসী।
এবার আসি নাস্তিকতার সঠিক আলোচনায়:
নাস্তিক্যবাদ (ইংরেজি ভাষায়: Atheism; অন্যান্য নাম: নিরীশ্বরবাদ, নাস্তিকতাবাদ) একটি দর্শনের নাম যাতে ঈশ্বর বা স্রষ্টার অস্তিত্বকে স্বীকার করা হয়না এবং সম্পূর্ণ ভৌত এবং প্রাকৃতিক উপায়ে প্রকৃতির ব্যাখ্যা দেয়া হয়। আস্তিক্যবাদ এর বর্জনকেই নাস্তিক্যবাদ বলা যায়। নাস্তিক্যবাদ বিশ্বাস নয় বরং অবিশ্বাস এবং যুক্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। বিশ্বাসকে খণ্ডন নয় বরং বিশ্বাসের অনুপস্থিতিই এখানে মুখ্য।
নাস্তিক্যবাদ আসে যুক্তিবাদ থেকে। নাস্তিকতা কোন বিশ্বাস বা ধর্ম নয়, এটি যাবতীয় বিশ্বাস বা ধর্মতত্বকে যাচাই বাছাই এবং যুক্তিসঙ্গত উপায়ে বাতিলকরণ। নাস্তিক্যবাদ বলে না যে “ঈশ্বর নেই”; নাস্তিক্যবাদ বলে, “মানবসভ্যতার ইতিহাসে ঈশ্বর আছে বা কোন অলৌকিক শক্তি আছে তার কোন উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ নেই”। এবং যেহেতু কোন প্রমাণ নেই, তাই ঈশ্বরের এই দাবীকে নাস্তিক্যবাদ বাতিল করে এবং ভ্রান্ত বলে মনে করে। তবে ঈশ্বরের কোন উপযুক্ত প্রমাণ ধার্মিকগণ দেখাতে সমর্থ হলে তা মেনে নিতে বিন্দুমাত্র আপত্তি নেই। যখনই পাওয়া যাবে, সেগুলো মেনে নেয়া হবে। তবে যুক্তিহীন বিশ্বাস যেহেতু যাচাই করবার কোন উপায় নেই, তাই একে খারাপ কাজে লাগাবার সম্ভাবনাই বেশি থাকে- যেহেতু এটা যুক্তিপ্রমাণহীন একটি বিশ্বাসমাত্র। এবং সত্যিকার অর্থে ঘটেছেও তাই। এছাড়া ধর্মগ্রন্থে যেই ঈশ্বরের কথা বলা আছে, সেই ঈশ্বর শুধু নোংরাই নয়, সাম্প্রদায়িক, হিংস্র, তোষামদপ্রিয় এবং লোভী। সে প্রাচীন কালের রাজাদের চরিত্রের অধিকারী, যে শুধু নিজের উপাসনা আর তোষামোদ চায়, তা না পেলেই ভয় দেখায়।

No comments:

Post a Comment